চিকুনগুনিয়া কীভাবে ছড়ায়
এডিস ইজিপ্টি ও এডিস অ্যালবোপিকটাস মশার মাধ্যমে এ রোগ ছড়ায়
এডিস মশা কোথায় জন্মায়, কখন কামড়ায়
এই মশা জন্মায় পরিষ্কার পানিতে। সাধারণত বাড়ির ফুলের টব, পরিত্যক্ত পাত্র ও টায়ার, ডাবের খোসায় জমে থাকা পানিতে ডিম পাড়ে এরা। এ ছাড়া এসি ও ফ্রিজে জমে থাকা পানিতেও ডিম
পাড়ে এই মশা
চিকুনগুনিয়ার লক্ষণ
হঠাৎ জ্বর, তাপমাত্রা ১০৪ পর্যন্ত হতে পারে। গিঁটে ব্যথা, প্রচণ্ড মাথাব্যথা মাংসপেশিতে ব্যথা শরীরে শীত শীত অনুভূতি বমি ভাব এর লক্ষণ ।
তাছাড়া বমি ও ডায়রিয়া, চামড়ায় লালচে দানা, মুখে ঘা, চোখ জ্বালা, অবসাদ, অনিদ্রা ইত্যাদি এর লক্ষণ ।
কি করণীয়?
- পানি দিয়ে শরীর মুছা
- সম্পূর্ণ বিশ্রামে থাকা
- প্যারাসিটামল নেওয়া
- প্রচুর পানি বা তরল পান করা
- ব্যথার জন্য গিঁটের ওপর ঠান্ডা পানির সেঁক দেওয়া
- হালকা ব্যায়াম করা
কিভাবে চিকুনগুনিয়া শনাক্ত করবেন ?
জ্বর-ফুসকুড়ি-গিরা ব্যথা থাকলে এবং রক্তে ডেঙ্গু অ্যান্টিজেন নেগেটিভ থাকলে চিকুনগুনিয়া হয়েছে বলে ধরে নেওয়া হয়। জ্বরের প্রথম সপ্তাহে রক্ত পরীক্ষা করে ও তারপর আইজিএম অ্যান্টিবডি পরীক্ষা করে চিকুনগুনিয়া শনাক্ত করা সম্ভব।
চিকুনগুনিয়া প্রতিরোধে করণীয়
বাড়ির আঙিনা, আশপাশে যেন পানি না জমানো। নিয়মিত পরিষ্কার করা
ডাবের খোল, ফুলের টব, পরিত্যক্ত টায়ার ও এসি-ফ্রিজের পানি না জমা
নির্মাণাধীন ভবনের পানির চৌবাচ্চা নিয়মিত পরিষ্কার রাখা
মশারি ব্যবহার
১৯৫২ সালে তানজানিয়ার দক্ষিণাঞ্চলে প্রথম এ জ্বরের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। চিকুনগুনিয়া শব্দটিও এসেছে সেখানকার মাকোন্ডে নৃগোষ্ঠীর নিজস্ব ভাষা কিমাকোন্ডে থেকে। এর অর্থ গিঁটের ব্যথায় কুঁকড়ে যাওয়া।
চিকুনগুনিয়া নিয়ে ভয়ের কিছু নেই—সরকারের স্বাস্থ্য বিভাগ ও চিকিৎসকদের দেওয়া এমন আশ্বাসবাণী আশ্বস্ত করতে পারছে না এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের। এর মধ্যেই মশাবাহিত এই রোগটি ছড়িয়ে পড়েছে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায়। আর আক্রান্ত ব্যক্তি ও তাঁদের স্বজনেরা ছুটছেন বিভিন্ন হাসপাতাল ও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের চেম্বারে।
সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে ঢাকার বড় ছয়টি হাসপাতাল ঘুরে এমন চিত্র চোখে পড়েছে।
এসব হাসপাতালের চিকিৎসক ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলেছেন, এমনিতে চিকুনগুনিয়ায় আক্রান্ত হলে হাসপাতালে রেখে চিকিৎসা দেওয়ার মতো কিছু থাকে না। তারপরও রোগীদের কেউ কেউ, বিশেষ করে বৃদ্ধ ব্যক্তিরা হাসপাতালে থেকেই চিকিৎসা নিতে চান। হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা ও ভর্তি হওয়া রোগীর সংখ্যা গত মাসের তুলনায় কমেছে।
ঢাকায় এখন আতঙ্কের নাম মশা আর চিকুনগুনিয়া। এই রোগে কেউ মারা না গেলেও শরীরের বিভিন্ন অঙ্গে যে ব্যথা হয়, সেই যন্ত্রণা ভয়াবহ।
রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে প্রথম ২০০৮ সালে রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জে এ ভাইরাসে একাধিকজন আক্রান্ত হন। ২০১১ সালে ঢাকার দোহার উপজেলায় এই রোগ দেখা গেলেও পরে বিচ্ছিন্ন দু-একজন রোগী ছাড়া বড় বিস্তার ছিল না।